জবা ফুলের উপকারিতা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য

Urmi Moni ✅

১৭ ফেব, ২০২৫

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকগণ আপনার কি জানেন, জবা ফুল মানব দেহের জন্য কতটা উপকারী। আর চিন্তা নেই, আমার এ আর্টিকেল মন দিয়ে পড়ুন তাহলে জানতে পারবেন বিস্তারিত। আপনি কি আপনার ত্বক সুন্দর রাখতে চান, কি কি করলে আপনার ত্বক সুন্দর হবে শরীর ঠিক থাকবে চুল সুন্দর হবে এসব কিছু নিচে উল্লেখ করা হলো। স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের ক্ষেত্রে জবা ফুলের চা রোগ নিরাময়ের কাজ করে।

মন ভাল করতে ফুলের জুড়ি নেই মানসিক শক্তি সাহায্য করে ফুল সুন্দর ঘুমের জন্যও সাহায্য করে ফুল কিছু ফুল আছে যা খাওয়া এবং স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। এমনই একটি ফুল যেটি হচ্ছে জবা ফুল। জবা ফুলের অনেক উপকার রয়েছে। জবা ফুল নিরাময়ে সাহায্য করে এমন কি চুলের যত্নে জবা ফুল চমৎকার কাজ করে। জবা ফুল সুন্দর ও আকর্ষণীয় ফুল। জবা ফুলে অনেক কালার রয়েছে যেমন লাল গোলাপি হলুদ ইত্যাদি অনেক ধরনের জবা ফুল দেখা যায়।

প্রথমেই যা করবেন

জবা ফুল ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে পাপড়িগুলো ছিঁড়ে নিতে হবে। গরম পানি দিয়ে পাপড়ি গুলো ভালোভাবে ফুটিয়ে নিতে হবে। তারপর একটা ছাকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। তার সঙ্গে কিছু মিশিয়ে নিতে হবে লেবুর রস মধু এগুলা ভালো করে মিশিয়ে নিতে হবে। তারপর আপনার চা তৈরি। এই চা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখবে। সে সঙ্গে কোলেস্টেরলও কমাবে।জবা ফুলের মধ্যে যে আ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তা কিন্তু লিভারের জন্য অনেক উপকারী। সেই সঙ্গে লিভারের কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়। জবাফুলে থাকে বিশেষ একটি যৌগ ক্যান্সারের মতো দূরারোগ্য ব্যাধিকেও প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। এছাড়া জবা ফুলের চা আরো কি কি কাজে লাগে তা আমরা জানব।

ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করে

জবা ফুলের আরো উপকারী দিক হলো সেটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। বায়ো মেডিক্যাল ও বায়ো ফিজিক্যাল রিসার্চ কমিউনিকেশনস এ প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় যে, জবা ফুল থেকে তৈরি উপাদান ইনসুলিনেরপুনরুদ্ধার করতে পারে এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জবা ফুল থেকে ফেরুলিক এসিড বা এক ধরনের পলিফেনল এবং এটি ডায়াবেটিসের জন্য প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে থাকে। জবা ফুলের অনেক উপকারের দিক আছে। ডায়াবেটিসের জন্য জবা ফুল অনেক উপকারী।

ফেসপ্যাক হিসেবেও কাজ করে

লাল জবা ফুল পাপড়িগুলো শুকিয়ে গুড়া করে রেখে দিন।তারপর প্রতিদিন পানি বা দুধ বা ফলের রসে সাথে মিশিয়ে ব্যবহার করলে মুখ পরিষ্কার হবে, আর মুখের উজ্জ্বলতা অনেক বৃদ্ধি পাবে। বলিরেখার আবির্ভাব রোধ করে।তাহলে বুঝতে পারছেন যে লাল জবা ফুলের উপকার কত গুলো জবা ফুল দিয়ে আরও অনেক কিছু কাজ হয় জবা ফুলের মধ্যে ওমেগা ৩ সেটি এসিড থাকে। থাকে আলফা হাইড্রক্সি অ্যাসিড। যা আমাদের ত্বকের জন্য খুব ভালো।

চুল পড়ে যাওয়া কমাই

চুল পড়া রোধ করতে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহার করা খুবই প্রয়োজনীয়। আপনার চুল যদি সুন্দর করতে চান তাহলে জবা ফুলের পাপড়ি ব্যবহার করে দেখেন তার গুনাগুন টের পাবেন। চুল পড়া প্রতিরোধে জবা ফুলের পাপড়ি খুবই প্রাচীন প্রতিকার। জবা ফুলের তেল ব্যবহারে চুলের গোড়া শক্ত করে, কারণ জবা ফুলে থাকে ভিটামিন সি ও ক্যালসিয়াম। এই তেল আস্তে আস্তে মাথার তালুতে মালিশ করলে, রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় ও মাথার ত্বক পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে। তাই জবাফুলের পাপড়ি খুলেন তেল তৈরি করে বোতল জাতকরণ করে অনেক দিনের জন্য রেখে দিন। আর সাপ্তাহে তিন থেকে চারবার জবা ফুলের পাপড়ি তেল দিয়ে মাথা তালুতে ভালোভাবে মালিশ করুন। তাহলে আপনার মাথা রক্ত চলাচলের বৃদ্ধি পাবে সুন্দর থাকবে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে

ওজন কমানোর অভিপ্রায় নিয়ে শরীরচর্চা করছেন কিন্তু লাভের লাভ কিছুই হচ্ছে না তাই না। তাহলে আর দেরি কইরেন না আজ থেকে শুরু করে দেন, জবা ফুলের চা খাওয়া কিন্তু আপনার শরীরের জন্য খুবই উপকারী। জবা ফুলের মধ্যে থাকা যৌগগুলি পুষ্টিবিদদের মতে, বিপাক হার এর মান ভালো করতে পারে জবা ফুলের চা। আপনি যদি প্রতিদিন জবা ফুলের চা খেতে পারেন তাহলে আপনার ওজন কমতে সাহায্য করবে। বিপাক হার ভালো হলেও ওজন তো কমবে পাশাপাশি নন অ্যালকোহলিক ফ্যাটি সমস্যা থাকলে তাও নিয়ন্ত্রণ করে জবা ফুলের পাপড়ি দিয়ে বানানো চা।তাহলে আর দেরি না করে আপনারাও প্রতিদিন শুরু করে দেন জবা ফুলের চা খাওয়া।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ রাখে

দীর্ঘ দিন ধরে উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ভুগছেন? প্রতিদিন সকালবেলা খাবারের পর নিয়মিত ওষুধ খেতে হয়? চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ খাচ্ছেন, তার সঙ্গে খেতে শুরু করুন জবা ফুলের চা, জবা ফুলের চায়ে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ এ যা খেলে রক্তচাপ চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে। হাইপারটেনশনের সমস্যা দূর করবে আপনি যদি প্রতিদিন সকালবেলা এক কাপ করে জবা ফুলের চা খেতে পারেন। আপনার শরীরে সব সমস্যার সমাধান হবে প্রতিদিন সকালবেলা এক কাপ করে জবা ফুলের চা খেলে।

শুষ্ক ত্বক নিরাময়ে কাজ কর

শুষ্ক ত্বক নিরময়ে নারিকেল তেল বা তিলের তেলের সাথে জবার পাপড়ি একসাথে মিশিয়ে জাল করে নিয়ে তারপর ঠান্ডা করুন ঠান্ডা করা হয়ে গেলে আস্তে আস্তে ত্বকে লাগান। দেখবেন আপনার ত্বক কতটা সুন্দর হয়েছে। এটি শুষ্ক ত্বককে নিরাময় করবে যেকোনো ধরনের ফাটাও ভালো করবে। মুখের কোন ধরনের দাগ থাকলে সেটিও ভালো করবে। তাহলে কেন আমরা দেরি করছে চলুন আমরা ওটা শুরু করে দেই।

মূত্রনালী সংক্রমণ রোগ নিরাময় করে

বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। মন্ত্রণালীর সংক্রমণ কমাতে আ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ দেন চিকিৎসকরা। কিন্তু বারবার নানা কারণে এই ওষুধ খাওয়া ভালো নয়। আমরা এমনিও জানি শরীরের জন্য ওষুধ অনেক ক্ষতিকর। ক্ষনিকের জন্য ভালো করবে কিন্তু সারা জীবনের জন্য শরীর নষ্ট করে ফেলবে ওষুধ অনেক মারাত্মক জিনিস। তাই আমরা বাসায় বসে যদি ঘরোয়া উপায়ে মূত্রনালী সংক্রান্ত রোধ করতে পারি কেমন হয় বলেন তো, চলুন তাহলে আমরাও মূত্রনালী সংক্রমণ খুব মারাত্মক আকার ধারণ না করে থাকে সে ক্ষেত্রে আমরা জবা ফুলের চা খেতে পারি। জবা ফুলের চা খেয়ে দেখতে পারেন। এইমাত্র সংক্রমণ রোধ দূর হবে।

যেভাবে এই চা বানাবেন

বাড়িতে এই জবা চা বানিয়ে নেওয়া খুবই সহজ। আপনি বাড়িতে বসে জবা ফুলের চা বানাতে পারবেন। তিন থেকে টা জবা ফুল পাপড়ি ভালোভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন লেবু নিবেন। দুই কাপ পানি সাথে এক থেকে দু চামচ মধু মেশাবেন। জবা ফুলের পাপড়ি মধু দিয়ে বাসায় বসে অনেক সুন্দর একটা চা বানিয়ে নিতে পারবেন। এই এই চায় যদি আপনি প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা খান তাহলে আপনার রোগ নিরাময় হবে ইনশাআল্লাহ।

অসময়ে চুল সাদা হয়ে যাওয়ার রোধ করে

অসময়ে চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ প্রতিরোধ করবে এই ঘরুয়া পদ্ধতিতে বানানো জবা ফুলের পেস্ট। ঘরোয়া ভাবে জবা ফুলের পেস্ট বানিয়ে অনেকদিন রাখতে পারেন। এশিয়ান জার্নাল অফ এক্সপেরিমেন্টাল বায়োলজিক্যাল সাইন্স এ প্রকাশিত একটি গবেষণা প্রতিবেদনে জানানো হয় যে,জবা ফুল চুল সাদা হয়ে যাওয়াকে ধীর করতে পারে।

কিছু জবা ফুল পানিতে দিয়ে মিনিট ফোটানোর পর ঠান্ডা করে নিতে হবে। তারপর জবা ফুলকে পেস্ট করে নিয়ে মাথার তালুতে ও চুলে লাগাতে হবে। তারপর আপনি ২০ মিনিট মাথায় রাখতে পারেন ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। নিয়মিত এটি ব্যবহার করলে অসময়ের চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করবে। জবা ফুলের তেল নিয়মিত ব্যবহার করলে অসময়ে চুল সাদা হয়ে যাওয়া রোধ করে।