বেসন মুখে মাখার উপকারিতা ও ব্যবহার সম্পর্কে জানুন

অতিরিক্ত তৈলাক্ত ত্বক ব্রণের সমস্যার প্রধান কারণ। বেসন ফেসে থাকা অতিরিক্ত তেল দূর করে এবং ফেস কে  মসৃণ করে।  এটি আপনার ত্বকের ব্রণের সমস্যায় বেসন ব্যবহার করলে কালো দাগ  দূর করবে তা নয় ব্রণের দাগও দূর করে দেবে ফেসকে আরো ব্রাইটেনিং  করে তুলবে। তাহলে চলুন আর দেরি না করে আমরা জেনে নিই কিভাবে বেসন দিয়ে ব্রণ দূর করার করার ফেসপ্যাক তৈরি করবেন।

• ব্রণের সমস্যায় ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি পাত্র দুই চা চামচ বেসন, ২ টা চামচকাঁচা দুধ একসাথে ভালো করে মিশিয়ে নিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করতে হবে । তারপর এই পেস্টটি মুখে লাগিয়ে  ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।  তারপর বুঝতে পারবেন  আপনার ফেস এর কত সুন্দর একটা লুক।

• আপনার ত্বকে ব্রণের দাগ দূর করতে বেসনে সঙ্গে লেবুর রস এবং গ্রেড  করা শসা একসাথে মিশিয়ে পেস্ট তৈরি৷করতে হবে। এই পেজটি ও ২০ মিনিট মুখে রেখে দিন। এরপর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এই পেস্টটি নিয়মিত ব্যবহার করলে ব্রণের দাগ আস্তে আস্তে পরিষ্কার হয়ে যাবে।

• বেসন দিয়ে ব্রণ এবং ব্রণের দাগ দূর করতে প্রথমে একটি পাত্রে এক চা চামচ বেসন, এক চা চামচ হলুদ গুঁড়া, ২ চা চামচ তাজা টক দই একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এরপর ত্বকের যেখানে ব্রণের কালো দাগ রয়েছে সেখানে এই পেস্টটি লাগিয়ে নিন।পেস্টটি শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে মুখটি পরিষ্কার করে ফেলুন।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ফেসপ্যাক তৈরির নিয়ম

আপনার ফেস এ যদি অতিরিক্ত তেল তাকে তাহলে ব্রণের  সমস্যার সৃষ্টি হয়। ত্বকের সমস্যায় ভুক্ত ভোগীদের মধ্যে তৈলাক্ত  ত্বক যাদের রয়েছে তারাই বেশি ত্বকের সমস্যায় ভোগে।  তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ,  ব্যাকটেরিয়া আক্রমণ বেশি হয়ে থাকে।  যা সহজে দূর করা যায় না ব্রণের সমস্যা অনেক জেদি হয়ে থাকে। সে ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে এটেল এ সমস্যা মূল সমাধান সব রকমের ত্বকের সমস্যার হাত থেকে বাঁচার জন্য। বেসনের মধ্যে তেল শোষণ ক্ষমতা বেশি রয়েছে যার কারণে এটি মুখে দিলে তেলের পরিমাণ  কমে যায়। তাই যাদের তৈলাক্ত ত্বকের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য ভীষণ খুব উপকারী।   কিভাবে প্যাক তৈরি করবেন  তা নিচে দেওয়া হলো।

• ৩চা চামচ বেসন, ২ চা চামচ কাঁচা দুধ, ২ চা চামচ টক দই একসাথে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন।  এরপর প্যাক৪ি আপনার মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। এরপর ঠান্ডা পানিতে আপনার মুখটি ধুয়ে ফেলুন। এই প্যাকেট ব্যবহারে আপনার ত্বকের অতিরিক্ত তৈলাক্ত ভাব দূর হবে।

• ২ চা চামচ বেসন, ১ চা চামচ মধু ও অল্প পরিমাণে পানি  একসাথে মিশ করে ঘন একটি পেস্ট তৈরি করুন।  এরপর পেস্ট টি আপনার মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন এবং এখনও ২০ মিনিট ওয়েট করুন।  পেস্ট শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে তাহলে আপনার ত্বকের তেলতেলে ভাব দূর হবে।  এই পেস্টটি আপনি সপ্তাহে তিনবার ব্যবহার করতে পারেন, যদি আপনার অতিরিক্ত তেলের সমস্যা থেকে থাকে মুখে।

• ২ চা চামচ বেসন, ৪ চা চামচ  দুধ এর সঙ্গে ভালো করে মিশিয়ে একটু পেস্ট করে করুন। এরপর পেজটি মুখে এবং গলায় ভালো করে লাগিয়ে নিন। এরপর ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে আপনি দুই দিনেই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ জবা ফুলের উপকারিতা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য

সব ধরনের ত্বকে বেসন  ব্যবহার করতে পারেন আপনি। আপনার সাধারণ ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন। আবার শুষ্ক তো কেউ ব্যবহার করতে পারেন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসনের ব্যবহার অনেক উপকারী। যাদের ফেস তৈলাক্ত   তারা সহজেই বেসনের এই  ফেসপ্যাক ব্যবহার করতে পারেন।  ত্বকের অতিরিক্ত তেল নিঃসরণ বন্ধ করে। ত্বকে শুষ্কতা  দূর করার জন্যেও দারুন কাজে দেয় এই বেসনের ফেসপ্যাক। মেছতার দাগ সরাতে দারুন কাজে দেয়। ত্বকে লাবণ্য ফিরিয়ে এনে এক প্রাণবন্ত লুক  দেয় ব্যাসনের এই ফেসপ্যাকটি।বেসনের সঙ্গে মেশাতে হবে এই কয়েকটি উপাদান।  তবে অবশ্যই আলাদা আলাদা ফেসপ্যাক এর জন্য । 

• অ্যালোভেরা জেল 
• হলুদ 
• দুধের সর

বেসন ও অ্যালোভেরা জেল দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি নিয়ম

আসলে বেসন আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তার জন্যে অনেক তারকাও তাদের স্কিন কেয়ার রুটিনে এই বেসনের ফেসপ্যাক ব্যবহার করে থাকেন। কারণ, সব সময় পার্লারে এইতো এত টাকা খরচ করার প্রয়োজন হয় না । বাড়িতে বসে কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায়ে সাহায্যে আপনি এই ফেসপ্যাক বানিয়ে নিতে পারেন। 

আসলে বেসন আমাদের ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। বেসনের সাথে অনেক উপকরণ মিশ  করে নিয়ে আপনি যদি একটা ভালো ফেসপ্যাক বানাতে  পারেন। সেটি যদি আপনি আপনার ত্বকে লাগাতে পারেন অনেক উপকার পাবেন। বেসনো দুধের সর দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক বানাবো। 

আরো পড়ুনঃ ২০২৫ সালের ইংরেজি ও আরবি মাসের ক্যালেন্ডার

বেসন ও হলুদের ফেসপ্যাক তৈরির নিয়ম

• বেসন ও হলুদের  ফেসপ্যাক তৈরি করার জন্য প্রথমে একটি পাত্রে ২ টেবিল চামচ  বেসন ও আধা চামচ লেবুর রস এবং সামান্য পরিমাণে গোলাপজল মিশিয়ে ঘন একটি মিশ্রণ তৈরি করুন। এবার এটি আপনার ত্বকে লাগিয়ে দিন। শুকিয়ে গেলে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।

• বেসনো হলুদের ফেসপ্যাক  জন্য প্রথমে একটি পাত্রে ১  টেবিল চামচ বেসন এক চিমটি গুরু হলুদ মিশিয়ে নিন। এরপর একসঙ্গে যোগ করুন অল্প পরিমাণে গোলাপজল এবং টক দই দিয়ে ভালো করে মিশে একটি পেস্ট তৈরি করুন।  এই পেজটি ভালো করে মুখে মেখে ১৫ থেকে ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। তারপর ভালোভাবে উষ্ণ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি সপ্তাহের দুই থেকে তিনবার ব্যবহার করবেন।

• হলুদ দিয়ে ফেসপ্যাক তৈরির জন্য ১ টেবিল  চামচ হলুদ গুঁড়া ও ২ টেবিল চামচ বেসন এবং অল্প পরিমাণে গোলাপজল মিশিয়ে একটি প্যাক তৈরি করুন। এই ব্যাগটি ভালো করে ত্বকে লাগিয়ে নিন এবং ২০ মিনিট অপেক্ষা করুন। ২০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে আপনার মুখ ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে দুইবার আপনি কয়েকটি ব্যবহার করতে পারেন।

বেসন ও মধুর ফেস প্যাক তৈরির নিয়ম

বেসন ও মধু দিয়ে তৈরি ফেসপ্যাক আপনার ত্বকে ময়শ্চেরাইজ করতে সাহায্য করবে। এটি তোকে নরম করে বেসনের দানাদার ভাব ত্বকের ভেতরে কোষগুলো থেকে ময়লা ধুলো বালি দূর করতে  সাহায্য করে। এটি ব্যবহারে আপনার মুখের মৃত কোষগুলি দূর হয়ে যাবে আপনার মুখের সমস্যাগুলি দূর হবে। বিষন্ন মধু দিয়ে কিভাবে আপনার ত্বকে যত্ন নিবেন জেনে নিন।

• ১ টেবিল চামচ বেসনের সঙ্গে অল্প পরিমাণে পাতিলেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে নিন। তারপর বেসন মধু লেবুর রস  এই তিনটি উপকরণ ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। এটি মুখে লাগিয়ে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। একটি শুকিয়ে থাকলে ঠান্ডা জল দিয়ে আপনার মুখ ভালোভাবে ধুয়ে নিন।

• ১ থেকে ২  চামচ বেসনের সঙ্গে  মধু ভালোভাবে বিষয়টি ঘন পেস্ট তৈরি করুন। এরপর পুরো মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন পেস্ট পুরোপুরি শুকিয়ে আসলে  ফেসের  উপর হাত বুলিয়ে স্ক্রাব করুন পুরো মুখে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।

• এক চা চামচ সঙ্গে এত চামচ মধু ভালোভাবে মিশিয়ে নিন এবার  তৈরি কৃত পেস্টটি মুখে ভালোভাবে লাগিয়ে নিন। এরপর ১৫ মিনিট আপনার ত্বকে ভালোভাবে মাসাজ করুন। এরপর হালকা উষ্ণ গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ব্যবহারে আপনার বলে রেখা কম আসবে এটি সপ্তাহে একদিন ব্যবহার করতে পারেন।

পরিশেষে

তৈলাক্ত ত্বক একটি সাধারণ ত্বকে সমস্যা যা আমাদের দেশে প্রায় সকলেরই হয়ে থাকে এটি অনেক সময় অনেক ক্ষেত্রে একটি জীবনের একটি ছোটখাটো বাধা সম্মুখীন হয়ে দাঁড়ায়।  বেসন মুখে মাখার উপকারিতা সম্পর্কে এই পোস্টটি  কোন পড়ার পর  আশা করি আপনি বুঝতে পেরেছেন আপনার ত্বকের জন্য বেসনের ব্যবহার উপযোগী কিনা।  তবে এই সমস্ত ফেসপ্যাক তৈরি করার আগে সরাসরি মুখে ব্যবহার না করে হাতে ব্যবহার করে দেখতে পারেন কোন সাইড ইফেক্ট হচ্ছে কিনা তারপর মুখে ব্যবহার করবেন।

 অনেকের এলার্জি জাতীয় সমস্যা থাকে এজন্য সরাসরি কোন কিছুই মুখে ব্যবহার করা উচিত নয়। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি মুখে বেসন মাখার বিষয়ে বেসনের বিভিন্ন ফেস প্যাক তৈরি করা এবং ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানতে পারেছেন। আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি যদি উপকৃত হন তাহলে আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে তাদের জানার সুযোগ করে দিন ।  এমন আরো প্রয়োজনীয় তথ্য পোস্ট এবং জানা অজানা তথ্য জানতে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি নিয়মিত ভিজিট করুন ধন্যবাদ।